আসাদের পালানোর পর বিদ্রোহীদের সঙ্গে ঐক্যের আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী
- By Jamini Roy --
- 08 December, 2024
সিরিয়ার রাজনীতিতে এক নাটকীয় পালাবদল ঘটল রবিবার (৮ ডিসেম্বর)। দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বিদ্রোহীদের হামলার মুখে অজানা গন্তব্যে পালিয়ে গেছেন। তার পরপরই বিদ্রোহীদের সঙ্গে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ গাজি আল-জালালি।
ভোররাতে রাজধানী দামেস্কের পরিস্থিতি যখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন বাশার আল-আসাদ একটি ব্যক্তিগত বিমানে করে অজানা গন্তব্যে পালিয়ে যান। যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানায়, দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করা একটি বিশেষ বিমানে প্রেসিডেন্ট আসাদ পালিয়ে গেছেন। বিমানবন্দরে সরকারি বাহিনীর সদস্যরা তাকে বিদায় জানান।
বাশার আল-আসাদের পালানোর সঙ্গে সঙ্গেই বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামস (এইচটিএস) সিরিয়াকে ‘মুক্ত’ ঘোষণা করেছে। একটি টেলিগ্রাম পোস্টে তারা জানায়, "স্বৈরশাসকের পতনের মধ্য দিয়ে একটি অন্ধকার যুগের সমাপ্তি ঘটল। এখন সিরিয়া একটি নতুন যুগে প্রবেশ করেছে।"
তারা আরও জানায়, "অর্ধ শতাব্দীর শাসনের অবসান হয়েছে। বাস্তুচ্যুত সিরিয়ানরা ঘরে ফিরতে পারবে এবং বন্দিরা মুক্তি পাবে। এটি হবে একটি নতুন সিরিয়া, যেখানে শান্তি এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে।"
এদিকে, বিদ্রোহীদের প্রতি সমঝোতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ গাজি আল-জালালি। তিনি বলেন, "আমি বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি না। দেশের এই সংকটকালে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সচল থাকবে।"
তিনি বিদ্রোহীদের উদ্দেশ্যে বলেন, "আমরা আপনাদের প্রতি হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি এবং আপনারাও ইতোমধ্যে আমাদের প্রতি হাত বাড়িয়েছেন। আসুন, দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে যৌক্তিকভাবে চিন্তা করি।"
প্রধানমন্ত্রী জনগণকে সরকারি সম্পত্তি রক্ষার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "আমাদের সবার দায়িত্ব দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। বিদ্রোহী এবং সাধারণ জনগণ মিলে নতুন একটি সিরিয়া গড়ে তুলবে।"
বাশার আল-আসাদের পালানোর খবর আসার পর বিদ্রোহীদের মধ্যে শুরু হয় উদযাপন। তারা দামেস্কের বিভিন্ন অংশে মিছিল বের করে এবং "স্বাধীন সিরিয়ার সূচনা" বলে স্লোগান দিতে থাকে।
সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন এক চূড়ান্ত মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাতের পর এবার দেশটি এক নতুন দিগন্তে প্রবেশ করছে। বিদ্রোহী এবং সরকারের যৌথ উদ্যোগে একটি শান্তিপূর্ণ এবং ন্যায়সঙ্গত সিরিয়া গঠনের আশা করছে দেশের সাধারণ জনগণ।